অমিতাভ ঘোষ

Матеріал з উইকিউক্তি
২০০৭ এ অমিতাভ

অমিতাভ ঘোষ (জন্ম ১৯৫৬) একজন ভারতীয় বাঙালি লেখক এবং সাহিত্য সমালোচক। তিনি ইংরেজি সাহিত্যে অবদানের জন্যই বেশি পরিচিত।

উক্তি[ред.]

  • যে সময়কে ‘আধুনিক সময়’ বলে আমাদের শেখানো হয়েছে, সেটাকেই ​‘উন্নতি’ বলে পরিচিত করানো হয়েছে। কিন্তু দেখুন, ঔপনিবেশিক আগ্রাসন মূলত পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি করেছে। মানুষের ক্ষতি করেছে। ইন্দোনেশিয়ার বান্দা দ্বীপের বাসিন্দাদের মেরে, দাস বানিয়েছিলেন ডাচ ব্যবসায়ীরা, যার মূলে ছিল একটি ফলের বাণিজ্য। এভাবে ওখানে আধিপত্য বিস্তার করা হয়। ভারতবর্ষে আফিমের চাষ আর চীনে জবরদস্তিমূলকভাবে ঢোকানো হয় আফিমের চালান—দুটোই তো আসলে নৃশংসতার গল্প।
    • অমিতাভ ঘোষ, সাক্ষাৎকার: ১৩ জানুয়ারি ২০২৩, প্রথম আলো

অমিতাভ ঘোষ সম্পর্কে উক্তি[ред.]

  • এমন অসংখ্য উদাহরণ আছে ইতিহাসে। প্রকৃতির সঙ্গে যে আচরণ করা হয়, সে তা কোনো না কোনোভাবে ফিরিয়ে দেয়। বরং আরও বেশি অসহনশীল হতে সে বাধ্য হয়। কিছুক্ষণ আগে এখানকার আলোচনায় বলছিলাম, বর্তমান বিশ্বে নানা জায়গায় অদ্ভুত সব ঘটনা ঘটছে। সান ফ্রান্সিসকোর রাস্তায় হঠাৎ ম্যানহোল ফেটে ফোয়ারার মতো পানি বের হচ্ছে। ভেনিস বা মিয়ামিতে ভয়াবহ বন্যা হচ্ছে। প্রকৃতির এমন আচরণ বহুদিন ধরে আমাদের করা অত্যাচারের ফলাফল। আপনি আজ এমন একটা নদীতে এমন জায়গায় বাঁধ দিলেন, যেখানে পানির প্রবাহ ব্যাপকভাবে বাধাগ্রস্ত হয়, এই যে পানি আর পলি দুটোই বাধা পেল, এর কোনো প্রতিক্রিয়া হবে না? এমনভাবে সে কখনো ভাঙবে যে তখন আগের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি ক্ষতি হবে। মানুষের প্রাণনাশ হবে, গ্রাম ভেসে যাবে। তেমনি জীবাশ্ম জ্বালানি, কার্বন নিঃসরণের ক্ষেত্রেও একই কথা। এসব হচ্ছে প্রকৃতির প্রতি মানুষের নিষ্ঠুরতা, যা আবার সে ফিরিয়ে দেয়। কিন্তু দেখুন, আগেকার মানুষ তার প্রয়োজন হলে প্রকৃতির সঙ্গে সদ্ভাব রেখেই তা করার চেষ্টা করত।
    • অমিতাভ ঘোষ, সাক্ষাৎকার: ১৩ জানুয়ারি ২০২৩, প্রথম আলো
  • ।বস্তুগত ঐতিহ্যের চেয়ে আমার কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো, মানুষের মানবিক সম্পর্ক, যা এখন হারিয়ে যাচ্ছে। একটা শরণার্থীশিবির থেকে উদাহরণ দিই। ইতালির শরণার্থীশিবিরে অনেক যুবকের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তাঁরা জানালেন, একসময় গ্রামে তাঁরা চাষাবাদ করতেন। অভাবের সঙ্গে সুখও ছিল সেই যৌথ জীবনে। কিন্তু তাঁরা নাকি ছোটবেলা থেকেই ইন্টারনেট, স্মার্টফোন ব্যবহার করতেন। সেখানে বিভিন্ন মাধ্যমে দেখতেন কোনো আত্মীয়ের প্রবাসজীবনের ছবি। ভেবেছিলেন, ভালোই থাকবেন। কিন্তু কতখানি ঝুঁকি নিয়ে গ্রামের সেসব ছেলে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন পথ অতিক্রম করে নানা শরণার্থীশিবিরে আশ্রয় পেয়েছেন, তা আমরা সবাই জানি। কতজন এর মধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন! তো সেসব যুবকের মানবিক সম্পর্কগুলো এখন ইন্টারনেটে বাড়ির আপনজনদের সঙ্গে কথা বলার মাধ্যমে মেটে। যে শব্দ তিনি গ্রামে থাকতে ব্যবহার করতেন, যে গান তিনি গাইতেন, সেই সুর, শব্দ এখন আর তাঁর জীবনে নেই—যেমন গ্রামের জীবনের সম্পর্কগুলো বদলে গেল, তেমনি তাঁর জীবন থেকে হারিয়ে গেল কিছু গ্রামীণ শব্দ। আপনজনদের সঙ্গেও সম্পর্কটা কতখানি দূরবর্তী হয়ে গেল। ফলে আমার কাছে অতীতের মানবিক সম্পর্কগুলোই ভীষণ জরুরি।
    • অমিতাভ ঘোষ, সাক্ষাৎকার: ১৩ জানুয়ারি ২০২৩, প্রথম আলো
  • কজন লেখক অনেকভাবেই অতীতের সঙ্গে বর্তমানের সম্পর্ক তৈরি করেন। একটু আগের আলোচনায় (লিট ফেস্টের সদ্য সমাপ্ত সেশনে) বলছিলাম, মনসামঙ্গল কাব্য, পদ্মপুরাণ—এসব হচ্ছে আমাদের ‘আই ওপেনার’ বা চোখ খুলে দেওয়ার সাহিত্য। এসব সাহিত্যে শুধু চরিত্রের গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে ভাবলে ভুল হবে। বর্ণনার যে ধারা, তা এ অঞ্চলের প্রকৃতি, পরিবেশ, একই সঙ্গে আর্থসামাজিক পরিস্থিতি সম্পর্কেও ধারণা তৈরি করে।
    • অমিতাভ ঘোষ, সাক্ষাৎকার: ১৩ জানুয়ারি ২০২৩, প্রথম আলো
  • ইতিহাস তো অনেক পথ ধরে তৈরি হয়। অতীতের দিকে তাকালে দেখবেন, সব সময়ই বিকল্প ছিল। মানুষ তা খুঁজে দেখতে চেয়েছে। বর্তমানে দাঁড়িয়েও আমরা কিন্তু সেসব দিক নিয়ে ভাবি। ডেভিড ওয়েনগ্রোর দ্য ডন অব এভরিথিং বইটা পড়েছেন? এতে দেখিয়েছে, প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকেই মানুষ অনেক রকম পছন্দের মধ্যে দিয়ে এসেছে। আজকের সময়টা অনেকভাবেই আসতে পারত। ধরা যাক, গান্ধীজির গ্রাম নিয়ে ধারণার কথা। সেখান থেকে আমরা ‘স্মলেস্ট বিউটি’ ধারণাটা পেতে পারি। গ্রামকে কেন্দ্র করে ছোট পরিসরের স্বনির্ভর অর্থনীতির একটা সমাজের কথা ভেবেছিলেন তিনি। তেমন ছোট্ট কিন্তু সুন্দর একটা ব্যবস্থাপনা হয়তো আরও ভালো কিছু দিত আমাদের। তাই অনেক অনেক ধারার ভেতর থেকে একবারে নির্ধারণ করে কিছু বলা ঠিক হবে না।
    • অমিতাভ ঘোষ, সাক্ষাৎকার: ১৩ জানুয়ারি ২০২৩, প্রথম আলো

আরও দেখুন[ред.]

বহিঃসংযোগ[ред.]